সারা দেশের 17000 হাসপাতাল ও ডাইগোনেস্টিক সেন্টার দেখাশোনার জন্য মাত্র আছেন 4 জন লোকবল!!

এই চার জন কি যাদুর মাধ্যমে বা IP/CCCTV ক্যমেরার মাধ্যমে বা জ্বীন ভুতের মাধ্যমে এ গুলো নিয়ন্ত্রন করেন?

সারাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, হাসপাতালের লাইসেন্স থাকে না,তদারকির লোক থাকে না,ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট সহ ভুয়া থাইরয়েড হাসপাতাল ,সরকারী হাসপাতালে ভুয়া দরপত্রের নামে পুকুরচুরি,রোগীদের মানসম্পন্ন খাবার না দিয়ে কেন্টিনের ফান্ড ডাকাতি!ভুয়া ঔষধ কোম্পানীর দৌড়াত্য,সরকারী হাসপাতাল থেকে দালালের মাধ্যমে রোগী চলে যায় বেসরকারি ক্লিনিক নামক বন্ধীশালায় বা ভারতের মাদ্রাজ ও চেন্নাই!

মানুষকে হাসপাতালে পিটিয়ে স্পট ডেথ/ হত্যাকান্ডের পর জানা যায় যে হাসপাতালের ই লাইসেন্স নাই!!ওপারেশন দরকার না হলেও জোরপূর্বক অপারেশন করা!দেশে বিভিন্ন চোর,ব্যাংক ডাকাত,আমলা,অমুক তমুক মন্ত্রী,সচিব,ভন্ড ব্যবসায়ী নেতা,এদের দাপট ও নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে এসব অবৈধ স্বাস্থ্য সেবার নামে মানুষ মারার কারখানা!সঠিক নজরদারির অভাবে এবং মানহীন চিকিৎসার কারনে মানুষ নিত্যনৈমিত্তিক হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।এসব মানুষ মারার ব্যবসা আর কত দিন চলবে?দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের আসল কাজটি কি?জনগণের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে কতটুকু দায়বদ্ধতা আছে তাদের?
অক্সিজেন নাই এম্বুলেন্স নাই,হাসপাতালে অক্সিজেন বিস্ফোরনে রোগীদের জীবন্তমৃত্যু!

কিছুদিন আগে শাহেদ কান্ড ও রিজেন্ট হাসপাতালের দূর্নীতির জ্বলজ্যন্ত প্রমানের পর ও দেশে এসব হাসপাতালে জলছে জালিয়াতি চিকিৎসা সেবা!

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রলালয়ের মধ্যে কাজের কোন সমস্বয় আছে বলে কি মনে হয়?
এর আগেও আমরা দেখেছি ড্রাইভারের কথায় চলছিল ডিজির অফিস ও নিয়োগ ও বদলি বানিজ্য!!

কোটি টাকার ড্রাইভার!আঙ্গুল ফোলে কলাগাছ! এ ভাবে আর কত রোগীর হত্যাকান্ড হবে পেশাদার খুনিদের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোতে?
পুলিশ ই যদি কোন সেবা বা নিরাপত্তা না পায় তাহলে সাধারণত জনগণের কি অবস্থা হবে একটু ভেবেছেন?

মানুষের নিরাপত্তায় যিনি নিয়োজিত ছিলেন, সেই তিনিই পেলেন না নিরাপত্তা।

একজন আনিসুল করিম শিপন। মানুষের নিরাপত্তায় যিনি নিয়োজিত ছিলেন, সেই তিনিই পেলেন না নিরাপত্তা। এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর বিচার চেয়েছেন তার সহপাঠী ও অনুজরা। মাইন্ড এইড কর্তৃপক্ষের দাবি, শিপনকে শান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। মানুষকে মেরে ফেলে শান্ত করার এই পদ্ধতি আর কত বছর চলবে?এই ধরনের স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তার কি ভাবে পয়দা হয় বাংলাদেশের মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থায়?
গায়ের জুড়ে কি কোন মানুষিক চিকিৎসা চলে কিনা?
তাদের কি আদৌ এসব অমানবিক ভাবে রোগী হ্যান্ডেল করার কথা কিনা?ওরা আরো কতজনকে এ ভাবে শায়েস্তা করেছে?জনগণ তা জানতে চায়।
যদিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বলছে ভিন্ন কথা।
পেশায় ছিলেন পুলিশ, পড়াশোনা করেছেন প্রাণ রসায়নে। যখন পড়েছেন প্রাণের খুঁটিনাটি, তখনও কি জানতেন এমন নির্মমতার বলি হয়ে হারাতে হবে প্রাণ?

মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে জীবন হারানো আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশে নিয়োগ পান। ব্যাচমেটরা তাকে পেয়েছেন সদালাপী, পরোপাকারী হিসেবে। দায়িত্ব-কর্তব্যের সাথে যিনি আপস করেনি কখনও।

নিষ্ঠুরতার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা শিপন ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার সহপাঠী ও অনুজরা বলছেন; যে মানুষটি সাধারণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন; সেই তিনিই নিরাপত্তা পেলেন না!

মাইন্ড এইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভর্তির পর অসংযত আচরণ থামাতেই শিপনকে প্রহার করা হয়। কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক রোগীকে মারধোর সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিক। বরং এমন রোগীর প্রাপ্য সহানুভূতিশীল আচরণ।

এই বিশেষজ্ঞদের মতে, মনরোগ চিকিৎসার নামে অমানবিকতা থামাতে হলে, কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা মানহীন মাইন্ড এইড হাসপাতালগুলোকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী, দেশে মোট ১৭ হাজার ২৪৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরও বলছে, তাদের জনবল সংকটের কারণে সমস্যায় পড়তে হয়। একজন পরিচালকের অধীনে একজন সহকারী পরিচালক ও দুই জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে তাদের হাসপাতাল পরিদর্শনের কাজ চলে।
৫০ হাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক নবায়ন ফি বছরের পর বছর শত শত কোটি সরকারের পাওনা বকেয়া। ১৭ হাজারের অধিক প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করার জন্য ৪ জন লোকবল। কি তুঘলগী কান্ড। অতি কর্ম পরায়ণ সাবেক ডিজিকে কোন গুণের জন্য ২ বছর অতিরিক্ত চাকুরীর সুযোগ দেয়া হয়েছিল তা সহজেই অনুমেয়। মন্ত্রনালয় কি করে। শুধুই নিয়োগ বদলী শাস্তি ইত্যাদি।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক চলে দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন্স) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২-এর অধীনে। কিন্তু আইন বা বিধি বা নিয়ম সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অথচ হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার আপডেটেড থাকতেই হবে, এখানে কোনও কম্প্রোমাইজ চলবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি একজন প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলতে পারি, ল্যাবরেটরি ব্যাঙের ছাতার মতো ঢাকা শহরের আনাচে কানাচে। এই জায়গাগুলোতে সংস্কার হয় না। অথচ সময়, মানুষের চাহিদা, দেশের অগ্রগতির সঙ্গে সংস্কার, আধুনিকতা প্রয়োজন হয়। তাই স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ঢেলে সাজাতে হবে। একইসঙ্গে তাকে কিছু স্বায়ত্তশাষিত ক্ষমতাও দিতে হবে। তাদের কাজের ধরন বদলাতে হবে। আমাদের অবকাঠামোগত সুবিধা বা জনবল খারাপ নাই। কিন্তু প্রধান দুর্বলতা হচ্ছে সুপারভিশন, ফলোআপ এবং মনিটরিং নাই। এগুলো ঠিক থাকলেই স্বাস্থ্য খাতের এত বেহাল অবস্থা হতো না।’

জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শতকরা ৯৯ শতাংশ হাসপাতাল-ক্লিনিক ভাড়া বাড়িতে অবস্থিত। এদের মোডিফাই করা ভীষণ ডিফিকাল্ট। অপরদিকে, এসব হাসপাতালের কোনও গ্রেডিং নেই। অধিদফতরের জনবলও নেই, সেটাও ঠিক। এসব কারণে বিভিন্ন সময়ে আবেদন-টাকা দিলেও অধিদফতর থেকে পরিদর্শনে যায়নি।’

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তিনি মাত্র গত সপ্তাহে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, সবকিছু এখনও গুছিয়ে উঠতে পারেননি। তারপরও বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন কবে নাগাদ আপডেটেড হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটু সময় লাগবে। অনেক দিন ধরেই কোনও লাইসেন্স ইস্যু হয়নি, জ্যাম লেগে আছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি সে জট ছাড়ানোর কাজ আমরা শুরু করবো।’

এদিকে, যারা আগে ম্যানুয়ালি লাইসেন্স নিয়েছে তাদেরও অনলাইনে লাইসেন্স নিতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ডা. আয়শা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূলত অনলাইনে আবেদন করার নিয়মের পর থেকেই লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের শিথিলতা এসেছে। তবে সম্প্রতি লাইসেন্স নবায়ন নেই এমন হাসপাতাল ক্লিনিকের তালিকা করা হচ্ছে। আরও কাজ চলছে। যাদের লাইসেন্স নেই বা নবায়ন করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লাইসেন্স ছাড়াও অনেক হাসপাতাল-ক্লিনিক রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তাদের সংগঠনের সদস্য ১০ হাজারের বেশি। যাদের লাইসেন্স নেই বা নবায়ন নেই তাদের বিরেদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরকে অনেকবার বলা হয়েছে, পত্রিকাতেও সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

তবে এবারে কোভিড-১৯-এর কারণে অনেক হাসপাতালই লাইসেন্সের কাজ করতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনলাইনের নানা ইস্যুর কারণে অনেকে নবায়ন করতে পারছে না। সবকিছু আগে ঠিক করতে হবে। নয়তো এটা ঝামেলা হয়ে যাবে।’